Saturday, July 22, 2017

ইলেকট্রনিক লেনদেন বা ই-পেমেন্ট এবং পণ্য সরবরাহ বা লজিস্টিক ফ্রেমওয়ার্ক না থাকায় দেশে বিকাশমান ই-কমার্সের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বলছেন " ইলেকট্রনিক লেনদেন বা ই-পেমেন্ট এবং পণ্য সরবরাহ বা লজিস্টিক ফ্রেমওয়ার্ক না থাকায় দেশে বিকাশমান ই-কমার্সের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ১৩ জুলাই বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার ও ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এবং মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স ও ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সঙ্গে যৌথভাবে মাস্টারকার্ড, এসএসএল ওয়্যারলেস এবং টেকনোহ্যাভেনের পৃষ্ঠপোষকতায় ই-কমার্স পেমেন্টস ও লজিস্টিকসের উপর আয়োজিত সেমিনারে এ মন্তব্য করেন বক্তারা।" 
Source...

কিন্তু আসলেও কি ব্যাপারটা তাই ...

আদৌ কি ই-পেমেন্ট বা লজিস্টিক সাপোর্ট দায়ী !!! শতকরা ৯৫% বা তারও উপরে ই-কমার্স লেনদেন হয় ক্যাশ অন ডেলিভারির মাধ্যমে। কেন হয়??? কারন হাতে গোনা দু একটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া কেউই ব্র্যান্ড ডেভলপমেন্ট নিয়ে কাজ করে না যেখানে ব্র্যান্ড ডেভলপমেন্টের মাধ্যমে ক্রেতার বিশ্বাস অর্জন করতে হয় সেখানে আমাদের দেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান গুলো ক্যাশ অন ডেলিভারির মাধ্যমে ক্রেতার আস্থা অর্জন করতে ব্যাস্ত। অর্থাৎ ক্রেতা মূলত একটি প্রতিষ্ঠানের উপর বিশ্বাস করছে “ ক্যাশ অন ডেলিভারির” সেবার কারনে , কারণ এই ক্ষেত্রে কোন কারনে অর্ডারকৃত পণ্য পছন্দ না হলে ফেরত দেয়ার সুযোগ থাকে এবং পণ্য পছন্দ করে হাতে পাবার পর মূল্য পরিশোধের সুযোগ থাকে। অন্যদিকে যারা আগেই অনলাইনে মূল্য পরিশোধ করে থাকে তারা বিশেষ কোন সুবিধা পান না, বরং কোন কারনে পণ্য পছন্দ না হলে সেটা টাকা রিফান্ড পেতে সপ্তাহ খানেকের বেশী সময়ও লেগে যায়। আলিবাবার’র মত কোম্পানিতে আমরা চোখ বন্ধ করে নিশ্চিন্তে অগ্রিম পেমেন্ট করে দেই শুধু মাত্র তাদের ব্র্যান্ড ইমেজ আর পেমেন্ট পলিসির জন্য। সেখানে আমাদের দেশে কেউ ব্র্যান্ডের পেছনে ইনভেস্ট করতে আগ্রহী নয় যদিও পণ্য মার্কেটিং এর পেছনে বড় প্রতিষ্ঠান গুলো ভালোই খরচ করছে। অন্যদিকে পেমেন্ট গেটওয়ে প্রোভাইডার রা অনলাইন কেনাকাটা র ক্ষেত্রে বিশেষ কোন সুবিধা প্রদান করে না, যেখানে ক্যাশ অন ডেলিভারি’র ক্ষেত্রে অন্তত পণ্য হাতে পাওয়ার পর মূল্য পরিশোধের সুযোগ থাকে। সুতরাং জাতীয় পর্যায়ে ই-পেমেন্ট সেবা চালু করলেও এর মাধ্যমে সার্বিক ই-কমার্সের প্রসার কি আদৌ সম্ভব হবে এ নিয়ে যথেষ্ট ভাবার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি।

Saturday, June 10, 2017

একটি ব্যর্থ পরিকল্পনার গল্প এবং ফলাফল

দেশের প্রথম ক্লাসিফাইড সাইট হিসেবে ২০০৬ সালে যাত্রা শুরু করে তৎকালীন cellbazaar.com যা গ্রামীণফনের ভেঞ্ছার হিসেবে সবার কাছে পরিচিত ছিল ।২০০৮ সাল থেকে মূলত এই সাইটটির জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। ২০০৮ থেকে ২০১২ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত বেশ দাপটের সাথে নিজের উপস্থিতি ধরে রাখতে পারলেও বিপত্তি শুরু হয় ২০১২ সালের শেষ নাগাত যখন কিনা আরেক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান Bikroy.com বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম শুরু করে। প্রথমত সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যাপক প্রচারনার মাধ্যমে খুব অল্প সময়ে Bikroy.com বেচা-কেনার অন্যতম প্ল্যাটফর্ম হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে। পরবর্তীতে টিভিসি, বিলবোর্ড সহ নানা ধরনের চোখ ধাঁধানো প্রচারণার সকল শ্রেনির মানুষ bikroy.com এর সার্ভিস ব্যাবহারে উৎসাহিত হয়েছে। পরিস্থিতি অনুমান করতে পেরে এবং নিজেকে টিকিয়ে রাখতে cellbazaar.com তাদের সাইটে ব্যাপক পরিবর্তন আনে যা আসলে ছিল পুরোপুরি Bikroy.com এর অনুলিপি অথবা কপি। উল্লেখ্য cellbazaar গ্রামীণফোনের একটি ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস হিসেবে বিবেচিত ছিল এবং শুধু মাত্র গ্রামীণফোনের নাম্বার ব্যাবহার করেই Cellbazaar এ নিবন্ধন করা যেত। কিন্তু রেজিস্টার্ড ব্যাবহারকারীর সংখ্যা বাড়ানোর কৌশল হিসেবে cellbazaar যে কোন মোবাইল ব্যাবহারকারীর জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয় যা সম্ভবত পূর্বে নিবন্ধিত ব্যবহারকারীরা সহজ ভাবে মেনে নিতে পারে নি। সেই সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার কৌশল হিসেবে সম্পূর্ণ ভাবে Bikroy.com সাইটটি কপি করার ফলে মূলত Cellbazaar ই আসলে Bikroy.com কে প্রমোট করতে থাকে। কোন অজ্ঞাত কারনে cellbazaar এর ব্র্যান্ড টিম এই ভয়াবহ পরিণাম সম্পর্কে অনুমান করতে ব্যর্থ হয়। সবচেয়ে বড় বিপর্যয় হয় ২০১৪ সালের জুন মাসে যখন কিনা cellbazaar তার নাম পরিবর্তন করে ekhanei.com করে। যা ব্র্যান্ড টিমের আরেক ব্যর্থতা । গ্রামীণফেনের লাল-সবুজ লোগো টেলিনরের নীল লোগো দিয়ে রিপ্লেস করার সময় যে পরিকল্পনা তারা করেছিল cellbazaar এর ক্ষেত্রে সেরকম কিছুই করা হয়নি। পরবর্তীতে OLX এর সাথে সমন্বিত ভাবে যাত্রা শুরু করলেও সঠিক পরিকল্পনা এবং সময়য়ের চাহিদা বুঝতে না পারায় এই প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে আর ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হয় নি। অন্যদিকে ফেসবুকে ব্যাবহারকারী বাড়তে থাকায় এবং buy-sell এর মত ফেসবুক গ্রুপগুলোর কারণে ekhanei.com(Cellbazaar) দিন দিন তার প্রয়োজনীয়তা হারাতে থাকে এবং এক সময় বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
একজন ই-কমার্স বিজনেস এনালিস্ট হিসেবে ২০১৩ সালে cellbazaar এর তৎকালীন সিইও Mr. Arild Klokkerhaug কে এই ব্যাপার গুলো সম্পর্কে আমি নিজেই অবহিত করেছিলাম কিন্তু সে সময় তারা গুরুত্বের সাথে এই ব্যাপার গুলো নিয়ে কাজ করেননি। সঠিক পরিকল্পনা না থাকলে অন্যান্য ক্লাসিফাইড সাইটগুলোও এরকম পরিস্থিতির স্বীকার হতে পারে।


Saturday, October 22, 2016

অনলাইনে পেমেন্ট করা কি নিরাপদ ?

একটু সচেতনার অভাবে অনেকেই অনলাইনে পেমেন্ট করা ঝুঁকিপূর্ণ মনে করেন। কিন্তু বাস্তব চিত্র একদমই উল্টো। নগত অর্থ লেনদেন থেকে হাজার গুণ নিরাপদ লেনদেনর মাধ্যম হল এই “অনলাইন পেমেন্ট”।
প্রথমত, এখন পর্যন্ত অনেকেই মনে করেন শুধু মাত্র ক্রেডিট কার্ড দিয়েই অনলাইনে পেমেন্ট করা যায়, কিন্তু বাস্তবতা হল আপনি যেকোন ব্যাংকের ভিসা, মাস্টার কিংবা আমেরিকান একপ্রেস ডেবিট কার্ড দিয়েও অনলাইনে পেমেন্ট করতে পারবেন। জীহ্যাঁ, শুধু মাত্র ক্রেডিট কার্ড নয়, যেকোন ডেবিট কার্ড দিয়েও অনলাইনে পেমেন্ট করা যায় তবে অনলাইনে পেমেন্ট করার আগে অবশ্যই জেনে নিতে হবে আপনার কার্ডটি অনলাইনে লেনদেন করার জন্য একটিভেট আছে কিনা। কিছু কিছু ব্যাংকের কার্ড, অনলাইনে পেমেন্ট করার জন্য আলাদা ভাবে একটিভেট করার প্রয়োজন হয় না। যেমন, ডাচ বাংলা ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার, এনারবি ব্যাংক ইত্যাদি। এই ব্যাংক গুলোর ইস্যু করা সব ধরনের কার্ড দিয়ে সরাসরি অনলাইনে পেমেন্ট করা যায়। উক্ত ব্যাংক গুলো ছাড়াও অন্যান্য ব্যাংকের কার্ড দিয়েও অনলাইনে লেনদেন করা যায়, তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই ইস্যুয়ার ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করে আপনার কার্ডটি অনলাইনে লেনদেন করার জন্য একটিভেট করে নিতে হবে(ইস্যুয়ার ব্যাংক হল সেই ব্যাংক যার ইস্যু করা কার্ডটি আপনি অনলাইনে লেনদেন করার জন্য ব্যবহার করতে যাচ্ছেন)
কোন ওয়েবসাইট থেকে পণ্য কিনে অনলাইনে কার্ডের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধ করার ক্ষেত্রে লেনদেনটি সবসময় ব্যাংকের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়। একটু ভালো ভাবে খেয়াল করলেই দেখবেন আপনি যে পেজটিতে কার্ড নাম্বার টাইপ করছেন সেটি আসলে ব্যাংকেরই একটি পেইজ। মূলত কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট করে আপনি যা করছেন সেটা হল, আপনি আপনার নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকেই বিক্রেতাকে পণ্যের মূল্য পরিশোধ করছেন এবং যেহেতু লেনদেনটি সরাসরি ব্যাংকের মাধ্যমে সম্পাদিত হচ্ছে তাই এটি ১০০ ভাগ নিরাপদ।
বিভিন্ন দোকান কিংবা শোরুমে আমরা যে POS মেশিন দেখি , অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেমটিও প্রায় একই ভাবে কাজ করে। পেমেন্ট গেটওয়ে কোম্পানি গুলো মূলত একটা হাব হিসেবে কাজ করে, অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট পেইজে সকল ধরনের পেমেন্ট মডিউল একত্রে সংযুক্ত করে যাতে করে একজন ক্রেতা একটি মাত্র পেজের মাধ্যমেই বিভিন্ন ব্যাংক,ইন্টারনেট ব্যাংকিং কিংবা মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে পণ্যের মূল্য পরিশোধ করতে পারে।
অনলাইনে লেনদেন করা যায় এমন কার্ড গুলো সাধারনত 3D Secured হয়, অর্থাৎ প্রতিবার লেনদেন করার সময় OTP (one time password) জেনারেট হয় OTP হল সেই কোড নাম্বার যা কিনা অনলাইনে লেনদেন করার সময় গ্রাহক তার মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে পেয়ে থাকেন এবং শুধু মাত্র OTP দিলেই আপনার লেনদেনটি সম্পাদিত হবে অর্থাৎ শুধু মাত্র আপনি ছাড়া অন্য কেউ কোন ভাবেই আপনার কার্ডটি ব্যবহার করে অনলাইনে লেনদেন করতে পারবে না এমন কি কেউ যদি আপনার কার্ড নাম্বার কিংবা CVP কোডটিও জেনে যায় তারপরও এসএসএমের মাধ্যমে আপনার মোবাইল ফোনে যাওয়া OTP ছাড়া কোন ভাবেই লেনদেন করতে পারবেনা।
একটা বিষয় নিয়ে অনেকেই দুশ্চিন্তায় পড়ে যান উদাহারন স্বরূপ বলা যায়, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার এর ভিসা কার্ড দিয়ে পেমেন্ট করতে গিয়ে দেখলেন যে সিটি/ব্রাক/ইবিএল বা ডাচ বাংলা ব্যাংক পেইজে পেমেন্ট করতে বলা হচ্ছে। এক্ষেত্রে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই কারন এই পেইজে যেকোন ব্যাংকের ভিসা কার্ড থেকে পেমেন্ট করা যায়। অনলাইন লেনদেনর সর্বশেষ আপডেট হল ,
বর্তমানে EMI এর মাধ্যমে বিভিন্ন ই-কমার্স সাইট থেকে পণ্য কেনা যায়। কিন্তু এই ক্ষেত্রে অবশ্যই মনে রাখতে হবে শুধু মাত্র ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেই EMI সুবিধায় পণ্য কেনা যায়। ডেবিট কার্ড এর জন্য EMI সুবিধা প্রযোজ্য নয়।
আরেকটি কথাটি না বললেই না, তা হল প্রোডাক্ট সিলেক্ট করার পর পেমেন্ট গেটওয়ে পেইজ থেকে কার্ড নাম্বার দেয়া, OTP দেয়া ইত্যাদি স্টেপ গুলো একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সম্পন্ন করতে হয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই টাইম লিমিট হল ২০ মিনিট। অর্থাৎ এই সময়ের মধ্যেই আপনার লেনদেনটি সম্পন্ন করতে হবে নতুবা সেশনটি এক্সপায়ার্ড হয়ে যাবে এবং পুনরায় , সেই স্টেপ গুলো ফলো করতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এমন পরিস্থিতিতে কার্ড হোল্ডার মনে করেন ই-কমার্স সাইটটিতে সমস্যা এবং ই-কমার্স সাইটের ইনচার্জ মনে করেন পেমেন্ট গেটওয়েতে সমস্যা। কিন্তু সমস্যা আসলে কোথাওইনা, কারন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পেমেন্ট প্রসেস কমপ্লিট করে ফেললে এরকম কোন সমস্যার সৃষ্টি হয় না।
শেষ কথা হল, অনলাইন লেনদেন, ব্যাংকের মাধ্যমে করা লেনদেনের মতই নিরাপদ এবং POS মেশিন যেভাবে কাজ করে অনলাইন লেনদেন প্রসেসটা অনেকটা একই ভাবেই কাজ করে। নিশ্চিন্তে অনলাইনে কেনাকাটা করুন এবং ই-কমার্সকে এগিয়ে নিতে সচেতনতা তৈরি করুন।


অনলাইনে পেমেন্ট করা কি নিরাপদ ?

একটু সচেতনার অভাবে অনেকেই অনলাইনে পেমেন্ট করা ঝুঁকিপূর্ণ মনে করেন। কিন্তু বাস্তব চিত্র একদমই উল্টো। নগত অর্থ লেনদেন থেকে হাজার গুণ নিরাপদ লেনদেনর মাধ্যম হল এই “অনলাইন পেমেন্ট”।
প্রথমত, এখন পর্যন্ত অনেকেই মনে করেন শুধু মাত্র ক্রেডিট কার্ড দিয়েই অনলাইনে পেমেন্ট করা যায়, কিন্তু বাস্তবতা হল আপনি যেকোন ব্যাংকের ভিসা, মাস্টার কিংবা আমেরিকান একপ্রেস ডেবিট কার্ড দিয়েও অনলাইনে পেমেন্ট করতে পারবেন। জীহ্যাঁ, শুধু মাত্র ক্রেডিট কার্ড নয়, যেকোন ডেবিট কার্ড দিয়েও অনলাইনে পেমেন্ট করা যায় তবে অনলাইনে পেমেন্ট করার আগে অবশ্যই জেনে নিতে হবে আপনার কার্ডটি অনলাইনে লেনদেন করার জন্য একটিভেট আছে কিনা। কিছু কিছু ব্যাংকের কার্ড, অনলাইনে পেমেন্ট করার জন্য আলাদা ভাবে একটিভেট করার প্রয়োজন হয় না। যেমন, ডাচ বাংলা ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার, এনারবি ব্যাংক ইত্যাদি। এই ব্যাংক গুলোর ইস্যু করা সব ধরনের কার্ড দিয়ে সরাসরি অনলাইনে পেমেন্ট করা যায়। উক্ত ব্যাংক গুলো ছাড়াও অন্যান্য ব্যাংকের কার্ড দিয়েও অনলাইনে লেনদেন করা যায়, তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই ইস্যুয়ার ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করে আপনার কার্ডটি অনলাইনে লেনদেন করার জন্য একটিভেট করে নিতে হবে(ইস্যুয়ার ব্যাংক হল সেই ব্যাংক যার ইস্যু করা কার্ডটি আপনি অনলাইনে লেনদেন করার জন্য ব্যবহার করতে যাচ্ছেন)
কোন ওয়েবসাইট থেকে পণ্য কিনে অনলাইনে কার্ডের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধ করার ক্ষেত্রে লেনদেনটি সবসময় ব্যাংকের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়। একটু ভালো ভাবে খেয়াল করলেই দেখবেন আপনি যে পেজটিতে কার্ড নাম্বার টাইপ করছেন সেটি আসলে ব্যাংকেরই একটি পেইজ। মূলত কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট করে আপনি যা করছেন সেটা হল, আপনি আপনার নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকেই বিক্রেতাকে পণ্যের মূল্য পরিশোধ করছেন এবং যেহেতু লেনদেনটি সরাসরি ব্যাংকের মাধ্যমে সম্পাদিত হচ্ছে তাই এটি ১০০ ভাগ নিরাপদ।
বিভিন্ন দোকান কিংবা শোরুমে আমরা যে POS মেশিন দেখি , অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেমটিও প্রায় একই ভাবে কাজ করে। পেমেন্ট গেটওয়ে কোম্পানি গুলো মূলত একটা হাব হিসেবে কাজ করে, অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট পেইজে সকল ধরনের পেমেন্ট মডিউল একত্রে সংযুক্ত করে যাতে করে একজন ক্রেতা একটি মাত্র পেজের মাধ্যমেই বিভিন্ন ব্যাংক,ইন্টারনেট ব্যাংকিং কিংবা মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে পণ্যের মূল্য পরিশোধ করতে পারে।
অনলাইনে লেনদেন করা যায় এমন কার্ড গুলো সাধারনত 3D Secured হয়, অর্থাৎ প্রতিবার লেনদেন করার সময় OTP (one time password) জেনারেট হয় OTP হল সেই কোড নাম্বার যা কিনা অনলাইনে লেনদেন করার সময় গ্রাহক তার মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে পেয়ে থাকেন এবং শুধু মাত্র OTP দিলেই আপনার লেনদেনটি সম্পাদিত হবে অর্থাৎ শুধু মাত্র আপনি ছাড়া অন্য কেউ কোন ভাবেই আপনার কার্ডটি ব্যবহার করে অনলাইনে লেনদেন করতে পারবে না এমন কি কেউ যদি আপনার কার্ড নাম্বার কিংবা CVP কোডটিও জেনে যায় তারপরও এসএসএমের মাধ্যমে আপনার মোবাইল ফোনে যাওয়া OTP ছাড়া কোন ভাবেই লেনদেন করতে পারবেনা।
একটা বিষয় নিয়ে অনেকেই দুশ্চিন্তায় পড়ে যান উদাহারন স্বরূপ বলা যায়, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার এর ভিসা কার্ড দিয়ে পেমেন্ট করতে গিয়ে দেখলেন যে সিটি/ব্রাক/ইবিএল বা ডাচ বাংলা ব্যাংক পেইজে পেমেন্ট করতে বলা হচ্ছে। এক্ষেত্রে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই কারন এই পেইজে যেকোন ব্যাংকের ভিসা কার্ড থেকে পেমেন্ট করা যায়। অনলাইন লেনদেনর সর্বশেষ আপডেট হল ,
বর্তমানে EMI এর মাধ্যমে বিভিন্ন ই-কমার্স সাইট থেকে পণ্য কেনা যায়। কিন্তু এই ক্ষেত্রে অবশ্যই মনে রাখতে হবে শুধু মাত্র ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেই EMI সুবিধায় পণ্য কেনা যায়। ডেবিট কার্ড এর জন্য EMI সুবিধা প্রযোজ্য নয়।
আরেকটি কথাটি না বললেই না, তা হল প্রোডাক্ট সিলেক্ট করার পর পেমেন্ট গেটওয়ে পেইজ থেকে কার্ড নাম্বার দেয়া, OTP দেয়া ইত্যাদি স্টেপ গুলো একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সম্পন্ন করতে হয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই টাইম লিমিট হল ২০ মিনিট। অর্থাৎ এই সময়ের মধ্যেই আপনার লেনদেনটি সম্পন্ন করতে হবে নতুবা সেশনটি এক্সপায়ার্ড হয়ে যাবে এবং পুনরায় , সেই স্টেপ গুলো ফলো করতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এমন পরিস্থিতিতে কার্ড হোল্ডার মনে করেন ই-কমার্স সাইটটিতে সমস্যা এবং ই-কমার্স সাইটের ইনচার্জ মনে করেন পেমেন্ট গেটওয়েতে সমস্যা। কিন্তু সমস্যা আসলে কোথাওইনা, কারন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পেমেন্ট প্রসেস কমপ্লিট করে ফেললে এরকম কোন সমস্যার সৃষ্টি হয় না।
শেষ কথা হল, অনলাইন লেনদেন, ব্যাংকের মাধ্যমে করা লেনদেনের মতই নিরাপদ এবং POS মেশিন যেভাবে কাজ করে অনলাইন লেনদেন প্রসেসটা অনেকটা একই ভাবেই কাজ করে। নিশ্চিন্তে অনলাইনে কেনাকাটা করুন এবং ই-কমার্সকে এগিয়ে নিতে সচেতনতা তৈরি করুন।

Sunday, September 4, 2016

সময় থাকতেই ভবিষ্যতের প্রস্তুতি নিন

বর্তমান সময়ের আলোচনার কেন্দ্র বিন্দু ... বড় কোম্পানি, বিদেশী কোম্পানি, টেলকো কোম্পানি গুলোর ই-কমার্স যাত্রা। যা কিনা রীতিমত সবাইকে ভাবিয়ে তুলছে। কিন্তু একবারও মাথা ঠাণ্ডা করে ভেবে দেখেছেন বিদেশী কোম্পানি হোক আর প্রথম সারির দেশি কোম্পানি হোক, এসব সাইটে যে সব পণ্য পাওয়া যায় তাদের যোগান দাতা আপনার আমার মত সাধারণ কোন উদ্যোক্তাই । মূলত আমরাই আসলে এসব সাইটের মাধ্যমে ব্যবসা করছি। তবে সত্যি সত্যি ভাবার মত কিছু বিষয় আছে, সেটা হল আজ যার কাছ থেকে আপনি পণ্য এনে অনলাইনে বিক্রি করছেন কাল সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি নিজেই অনলাইন স্টোর খুলে বসে সেটা ছোট, বড় সব কোম্পানি কিংবা ই-কমার্স উদ্যোক্তার জন্যই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। তাই সময় থাকতেই ভবিষ্যতের প্রস্তুতি নিন।



Friday, August 5, 2016

মার্কেটার বনাম স্ট্যাটেজিক মার্কেটার

একজন মার্কেটার ভাবেন, প্রোমোশন করলেই সেলস জেনারেট হবে আর স্ট্যাটেজিক মার্কেটার ভাবেন, সেলস বাড়ানোর জন্য কিভাবে প্রোমোশন প্ল্যান করতে হবে। একজন মার্কেটার মনে করেন, কাস্টোমার ধীরে ধীরে নির্দিষ্ট ব্র্যান্ড এবং সিস্টেমের প্রতি অভ্যস্ত হয়ে উঠে। একজন স্ট্যাটেজিক মার্কেটার মনে করেন, কাস্টোমার সেই ব্র্যান্ড এবং সিস্টেমকেই প্রাধান্য দেয় যার সেবার ধরণ সময়ের চাহিদাকে পূরণ করে। একজন সফল মার্কেটার মনে করেন,তাকে দেখেই কম্পিটিটর শিখছে । একজন স্ট্যাটেজিক মার্কেটার মনে করেন, গুরুত্ব না দেয়া ছোট্ট একটি ইস্যু থেকেই কম্পিটিটর দুশ্চিন্তার করণ হয়ে যেতে পারে। একজন মার্কেটার সর্বদা পজেটিভ চিন্তা করেন এবং সেই কারণে তিনি বিভিন্ন ক্ষেত্র অধিক গ্রহণ যোগ্যতা পান। একজন স্ট্যাটেজিক মার্কেটার সর্বদা নেগিটিভ পয়েন্ট থেকে কাজ করেন তাই তার গ্রহণ যোগ্যতা সীমিত।


Thursday, July 28, 2016

ই-কমার্স স্ট্যাটেজি ; বাস্তবতা থেকেই ব্যবসার পরিকল্পনা

গুলশান লেকপার্ক থেকে গুলশান ২ নম্বর পর্যন্ত রিক্সা ভাঁড়া ২০ টাকা কোন কোন সময় ২৫ টাকা । গুলশান লেকপার্কের সামনে সবসময়ই কম বেশি রিক্সা পাওয়া যায়। আপনার সামনে যদি ৫ টি রিক্সা দাঁড়ানো থাকে , তাহলে আপনি কোন রিক্সাটিতে করে গুলশান ২ পর্যন্ত যেতে চাইবেন এবং কেন ?



1.       ৫ টি রিকশার মধ্যে অপেক্ষাকৃত নতুন রিক্সাটি আপনি বেছে নিতে চাইবেন ।
2.       দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য তরুণ রিক্সাচালকে আপনি বেছে নেবেন
3.       নিরাপদে গুলশান ২ পর্যন্ত যাওয়ার জন্য অভিজ্ঞ রিক্সাচালক বেছে নেয়ার চেষ্টা করবেন ।
4.       পরপর ৪ টি রিক্সা ২৫ টাকা ভাঁড়া চাইল এবং সর্বশেষ রিক্সাটি ২০ টাকা ভাঁড়া চাওয়ার তাকেই বেছে নেবেন।
5.       ৫ জন রিক্সাচালকের মধ্যে একজনের আন্তরিক ব্যাবহারে আপনি তাকে বেছে নেবেন।
6.       হটাৎ আপনি খেয়াল করলেন এই ৫ টি রিক্সার মধ্যে ১টি রিক্সায় আপনি এর আগেও কয়াকবার যাতায়াত করেছেন। সুতরাং আপনি সেই রিক্সাটিই বেছে নেবেন ।
      
উল্লেখিত পয়েন্টস ১-৬  তুলনা করা হল একটি ই-কমার্স কোম্পানির সফলতার সাথে।


POINT : 1 & 4
৫ টি রিকশার মধ্যে অপেক্ষাকৃত নতুন রিক্সাটি আপনি বেছে নিতে চাইবেন।
পরপর ৪ টি রিক্সা ২৫ টাকা ভাঁড়া চাইল এবং সর্বশেষ রিক্সাটি ২০ টাকা ভাঁড়া চাওয়ার তাকেই বেছে নেবেন।

৫টি ই-কমার্স সাইট একই মডেলের ব্লুটুথ স্পীকার একই দামে বিক্রি করছে । ক্রেতা কেন আপনার সাইট থেকেই কিনবে? বাড়তি কিছু ভ্যালু অ্যাড করুন , যেমন স্পীকারটি ব্যাগের সাথে ঝুলিয়ে রাখার জন্য একটা হুক অ্যাড করতে পারেন অথবা একটা পাউছ অ্যাড করতে পারেন তাতে করে ক্রেতা এই স্পীকারটি আপনার সাইট থেকেই কিনবে। এমন কি অন্য কোন সাইটে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে পণ্যটি পাওয়া গেলেও ক্রেতা আপনার সাইট থেকেই পণ্যটি কিনতে চাইবে।   

POINT : 6
হটাৎ আপনি খেয়াল করলেন এই ৫ টি রিক্সার মধ্যে ১টি রিক্সায় আপনি এর আগেও কয়াকবার যাতায়াত করেছেন। সুতরাং আপনি সেই রিক্সাটিই বেছে নেবেন।

মূলত এটা হল রিপিট কাস্টমার এবং কাস্টমার লয়ালিটি । ইতিপূর্বেই যে ব্যক্তি আপনার সাইট থেকে ব্লুটুথ স্পীকারটি কিনে সন্তুষ্ট হয়েছেন, নতুন কোন পণ্য কেনার প্রয়োজন হলে তিনি অবশ্যই আপনার সাইটে একবার হলেও ভিজিট করবেন এবং চেষ্টা করবেন আপনার সাইট থেকেই পণ্যটি কেনার জন্য।   


POINT :2,3 & 5
দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য তরুণ রিক্সাচালকে আপনি বেছে নেবেন।
নিরাপদে গুলশান ২ পর্যন্ত যাওয়ার জন্য অভিজ্ঞ রিক্সাচালক বেছে নেয়ার চেষ্টা করবেন ।
৫ জন রিক্সাচালকের মধ্যে একজনের আন্তরিক ব্যাবহারে আপনি তাকে বেছে নিতে পারেন।

আপনার সাইটের নিয়মিত ক্রেতাদের জন্য আপনার সাইটি একটি নিরাপাদ এবং ঝামেলাহীন অনলাইন কেনাকাটার স্থান, দীর্ঘদিন অনলাইনে ব্যবসা পরিচালনার অভিজ্ঞতা এবং ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করতে পারায় আপনি সবার থেকে এগিয়ে থাকবেন এবং আপনার আন্তরিক কাস্টমার সাপোর্টের কারণে ক্রেতার প্রথম পছন্দই হবে আপনার ইকমার্স সাইটটি ।

-----------------ধন্যবাদ --------------------