Thursday, July 24, 2014

*** সম্ভবত আমরাই প্রথম ই-কমার্স নেটওয়ার্ক তৈরি করতে চলেছি ***

মূলত এটা একটা ভার্চুয়াল বিজনেস প্ল্যাটফর্ম সহজ ভাবে বলতে গেলে একটা ওয়েবসাইট যেখানে ঢাকার জনপ্রিয় মার্কেট গুলো থেকে অনাইলনে কেনাকাটা করার সুযোগ থাকবে পাশাপাশি বিভিন্ন ব্র্যান্ড, এফ-কমার্স (ফেইসবুক পেইজ এর মাধ্যমে পরিচালিত প্রোজেক্ট) এবং ব্যাক্তিগত পণ্য ক্রয়-বিক্রয় এর জন্য ক্লাসিফাইড অ্যাড সার্ভিস থাকবে।   

যদি শুধু মাত্র ঢাকার বিপণি-বিতান গুলোর কথাই বলি, বর্তমানে মার্কেটগুলো সপ্তাহে ৬ দিন এবং প্রতিদিন ৮-১০ ঘণ্টা ক্রেতা সাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকে এবং দুর্ভাগ্যবশত শুধু মাত্র ঢাকাতে অবস্থানকারী এক জন ক্রেতাই এই মার্কেট গুলো থেকে পণ্য ক্রয় করার সুবিধা লাভ করেন। আবার প্রতিদিন যে পরিমাণ ক্রেতা একটি দোকান কিংবা শোরুম এ ভীড় করে তাদের মধ্য থেকে সবাই কিন্তু পণ্য ক্রয় করে না। এদের মধ্যে অনেকেই থাকেন যারা নিদিষ্ট পণ্যটি সম্পর্কে জানতে বা দেখতে আসেন।  

অনলাইন বিজনেস প্ল্যাটফর্ম এ যুক্ত হবার কারণে বিপণী-বিতান গুলো সপ্তাহে ৭ দিন আর দিনে ২৪ ঘণ্টা ক্রেতা সাধারণের জন্য উন্মক্ত থাকবে, শুধু তাই নয় সারা বাংলাদেশের মানুষ এই সব বিপনি-বিতান থেকে কেনাকাটা করার সুযোগ পাবে। অর্থাৎ এখন সিলেট কিংবা রাজশাহীতে বসেও বসুন্ধারাসিটি কিংবা যমুনা ফিউচার পার্ক থেকে কেনাকাটা করার সুযোগ তৈরি হবে এবং অন্যদিকে বসুন্ধারাসিটি কিংবা যমুনা ফিউচার পার্ক এ অবস্থিত একটি দোকান বা শোরুম সারা দেশব্যাপী ব্যাবসা পরিচালনা করতে পারবে।  

এবার আসা যাক এফ-কমার্স এবং ই-কমার্স নিয়ে যারা কাজ করছেন তাদের কথায়। দিন দিন ই-কমার্স এর সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলছে এফ-কমার্স প্রোজেক্ট এর সংখ্যা। কিন্তু শুধু মাত্র ফেইসবুকে  একটা পেইজ কিংবা শুধু একটি ওয়েবসাইট তৈরি করলেইতো আর সফল হওয়া যায় না। আবার শুধু মাত্র ভালো পণ্য সরবরাহ করলেও ব্যাবসা হবে না , ব্যাবসা তখনই হবে যখন প্রতিযোগিতা থাকবে ক্রেতা থাকবে এবং পণ্য গ্রহণের জন্য ভোক্তার চাহিদা থাকবে। আর তার জন্য প্রয়োজন সঠিক বিপনন পরিকল্পনা। ব্যাক্তিগত পর্যায়ে নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে অনেকেই এফ-কমার্স এবং ই-কমার্স কে বেঁছে নিচ্ছেন । অনলাইন ভিত্তিক এই বিপনন ব্যাবস্থা অল্প সময়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠার মূল কারণ হল স্বল্প পুঁজিতে যেকেউ ই-কমার্স কিংবা এফ-কমার্স প্রোজেক্ট পরিচালনা করতে পারেন ,যেখানে কিনা গতানুগতিক রীতিনীতি অনুসরণ করে একটি দোকান বা শোরুম নিতে হলে প্রথমেই লাখ টাকার হিসাবনিকাশ করতে হয়।

অনলাইন বিজনেস প্ল্যাটফর্ম এ যুক্ত হবার কারণে ই-কমার্স এবং এফ-কমার্স প্রোজেক্ট গুলো নামীদামী বিপনিবিতান গুলোর সাথে একই সারিতে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাবে। সেই সাথে সারা দেশব্যাপী পণ্য বিপণন এবং নিজস্ব ইউআরএল ব্যাবহার করে ই-স্টোর ব্যাবহারের সুবিধা ও পাওয়া যাবে।       

সাইটটি এখনও নির্মাণাধীন অবস্থায় আছে। আশা করছি এই বছরের শেষ নাগাত এটি পুরোপুরি তৈরি হয়ে যাবে।

সাইট লিঙ্ক


এই প্রোজেক্ট সম্পর্কে সকলের গুরুত্বপূর্ণ মতবাদ আশা করছি ।  

Monday, July 14, 2014

প্রচারেই প্রসার ,সম্ভাবনাময় ডিজিটাল মার্কেটিং

প্রচারেই প্রসারব্যাবসা করতে হলে কথাটি মনে প্রাণে মানতেই হবে। না মানলে লোকসান যেটা হবে তা হল, আপনি আপনার জায়গাতেই থাকবেন কিন্তু বাকি সবাই আপনাকে ছেঁড়ে অনেকদূর এগিয়ে যাবে। ফলাফল কেউ না কেউ খুব সহজেই আপনার মার্কেট পজিশনটা নিজের করে নিবে এবং আপনার কাস্টমাররা খুব তাড়াতাড়ি আপনাকে ভুলে যাবে। 

বড় বড় কোম্পানি গুলো মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে অনেক বেশী গুরুত্ব দিলেও সাধারণ উদ্যোক্তার জন্য ব্যাপারটা বেশ কষ্টসাধ্য। যার অন্যতম মূল কারণ বাজেট স্বল্পতা কিন্তু তার মানে এটা ভাবা কখনই ঠিক হবেনা যে, বড় বড় কোম্পানি যেখানে পারেনি অথবা সফল হয়নি সেখানে আপনি কিভাবে পারবেন আর মার্কেটিংএ অদক্ষতার জন্য যদি কোন প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায় সেটার জন্য অবশ্যই সেই প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্ট দায়ী কারণ তারা দায়িত্ব পালনে অদক্ষ।        

বর্তমান সময়ে কোন ব্যাবসা কে প্রোমট করার জন্য অথবা ব্র্যান্ডিং করার জন্য কেউ যদি গতানুগতিক মার্কেটিং পদ্ধতি অনুসরণ করতে চায় তবে নিঃসন্দেহে অনেক বেশী ব্যায় বহুল আর এই ব্যায় নিয়ন্ত্রন করে আরও বেশী কার্যকর মার্কেটিং ব্যাবস্থার নাম “ডিজিটাল মার্কেটিং”। ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে যদি লিখতে যাই তবে নির্ঘাত ছোটখাট একটা বই হয়ে যাবে, তাই খুব সংক্ষেপেই একটু বলি, ব্যাস্ততম সড়কের মোড়ে অথবা ট্রাফিক সিগন্যালে বিশাল আকার বিজ্ঞাপন শূন্য বিলবোর্ড গুলো নিশ্চয়ই দেখেছেন একসময় বিলবোর্ডের রমরমা ব্যাবসা থাকলেও ডিজিটাল মার্কেটিং এর জনপ্রিয়টার জন্য বিলবোর্ড ব্যাবসায়ীদের বেশ বেগ পেতে হচ্ছে (যদিও এটা সাময়িক)। অন্যদিকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে আছে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং (ডিজিটাল মার্কেটিং এর পার্ট)। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর জনপ্রিয় একটা প্ল্যাটফর্ম এর নাম ফেসবুক। শুধু মাত্র অনলাইন এ বসে ৫০,০০,০০০ বাংলাদেশীর সামনে নিজের ব্র্যান্ড মার্কেটিং এর সুযোগ একমাত্র ফেসবুকই দেয় এবং টার্গেট কাস্টমারের একদম চোখের সামনে গিয়ে নিজের ব্র্যান্ড প্রোমট করার সুযোগটাও কিন্তু সম্ভব হয়েছে ডিজিটাল মার্কেটিং এর কল্যাণেই।

সম্ভাবনা আছে বলেই ই-কমার্স বিজনেস এর শুরুটা হয়েছে এবং ই-কমার্স নিয়ে সবার উৎসাহ দিন দিন বেড়েই চলছে কিন্তু সমস্যা একটাই সঠিক গাইড লাইন দেয়ার মত তেমন কেউ নেই তাই বলে এটা ভাবা মোটেও ঠিক হবেনা যে সব ই-কমার্স প্রোজেক্ট থেকেই খুবই সামান্য পরিমাণ প্রফিট আসে। নিজস্ব আইটি সাপোর্ট, মার্কেট স্টাডি করার মনোভাব, ডেলিভেরি সার্ভিস আর কিছুটা মার্কেটিং জ্ঞান থাকলে প্রতি মাসে ৪০,০০০ -৪৫,০০০ টাকা প্রতি মাসে ইনকাম করা খুব একটা দুঃসাধ্য ব্যাপার মোটেও না (না জেনে মোটেও বলছি না)। টি-শার্ট কিনতে চাইলে মাথায় যেমন বিক্রয়.কম এর কথা আসবেনা তেমনি বাসার পুরনো ফার্নিচার বিক্রি করার জন্যও নিউমার্কেট এর কথা মাথায় আসবেনা। এর নাম ব্র্যান্ড পজিশনিং। ১৬,০০,০০,০০০ কোটি জনসংখ্যার ৩.৫% মানুষও যদি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হয়ে থাকে তাহলে ইন্টারনেট বাবহারকারীর সংখ্যা হয় ৫৬,০০,০০০। তারপরও যদি কেউ মনে করেন স্যাম্পল সাইজ মার্কেটিং এর জন্য যথেষ্ট না এবং ডোর টু ডোর মার্কেটিং এর মাধ্যমে আরও বেশী কাস্টমার পাওয়া সম্ভব, সেটা একান্তই তার নিজস্ব মতবাদ। ডোর টু ডোর মার্কেটিং সফল তখনই হবে যখন কিনা আপনার কথা শোনার জন্য ক্লায়েন্ট যথেষ্ট সময় দেবেন এবং নির্দিষ্ট প্রোডাক্ট এর জন্য ক্লায়েন্টের চাহিদা থাকবে। তার আগে আরেকটা ব্যাপার কাজ করে তা হল আপনার ব্র্যান্ড ইমেজ। আপনার কোম্পানির সেলস পারসনের যদি প্রথমে ক্লায়েন্টের কাছে বোঝাতে হয় যে “আমি অমুক কোম্পানি থেকে এসেছি, এই আমাদের প্রোডাক্ট ... ... ইত্যাদি ইত্যাদি ” ক্লায়েন্ট এমনিতেই বিরক্ত হয়ে যাবে। কারণ আপনি যাদের ক্লায়েন্ট ভেবে সেলস পারসনদের পাঠাচ্ছেন, আরও ৫ টা প্রতিষ্ঠানও ঠিক একই ভাবে একই ক্লায়েন্টের কাছে প্রোডাক্ট সেলস করার জন্য বিক্রয় প্রতিনিধি পাঠাবে এবং ক্লায়েন্ট তার প্রোডাক্টই কিনবে যার নাম টা বেশী পরিচিত যাকে আমরা বলি “ব্র্যান্ড ইমেজ”।


একটা শক্তিশালী মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলার জন্য তৈরি করা যেতে পারে একটা কমন ওয়েব বেইজ প্ল্যাটফর্ম। সহজ কথায় একটা ওয়েবসাইট যেখানে প্রতিটা ই-কমার্স প্রোজেক্ট এবং ফেসবুক পেজ এর নিজস্ব ই-ষ্টোর থাকবে পাশাপাশি সব ধরণের প্রোডাক্ট নিয়ে ই-ষ্টোর খোলার সুযোগ থাকবে এবং কমার্শিয়াল অ্যাড এর জন্য প্রচুর স্থান থাকবে। প্রোডাক্ট/ ই-ষ্টোর প্রমোশনের জন্য বিভিন্নও রকম ফিচার অ্যাড এর ব্যাবস্থা থাকবে। সকলে মিলে যদি ওয়েবসাইট এর জন্য প্রমোশনের জন্য কাজ করা যায় তাহলে অনেক বড় ধরণের মার্কেটিং করা সম্ভব আর সাইট এর মার্কেটিং মানেই আপনার ই-ষ্টোর প্রমোট করার সুযোগ অন্যদিকে ভিজিটরও এক ওয়েব সাইটে সব ধরণের ই-ষ্টোর পেয়ে যাবে সে নিজেও চাইবেনা অন্য কোথাও ভিজিট করতে। অনেকটাই সুপার সপ এর বিজনেস এর মত এক ছাদের নীচেই যখন সব পাওয়া যাবে তখন কষ্ট করে কেন ভিন্ন ভিন্ন ষ্টোরে যাবেন। 

Sunday, July 13, 2014

***** ই-কমার্স এর জন্য কিছু মার্কেটিং টিপস *****

·         আপনার সাইট মার্কেটিং করলে ভিজিটর আসবে এটাই স্বাভাবিক , কিন্তু ভিজিটর আসলেই যে আপনি সেলস পাবেন এমনটা ভাবা ঠিক না। বাংলালিঙ্ক কিংবা গ্রামীণ ফোনের টিভি অ্যাড গুলো নিশ্চয় দেখেছেন এবং হয়তো আপনার ভালোও লেগেছে কিন্তু এই ভালো লাগা থেকে কি আপনি আপনার পুরনো সিম কার্ডটি পরিবর্তন করে বাংলালিঙ্ক বা গ্রামীণ সংযোগ ব্যাবহার করছেন ? আপনি আপনারন সিম কার্ডটি শুধু মাত্র তখনই পরিবর্তন করবেন যখন কিনা প্রয়োজন অনুভব করবেন।

·         মার্কেটিং প্ল্যানটি ধাপে ধাপে সাজিয়ে নিন।
যেমনঃ আপনার মার্কেটিং অবজেক্টিভ কি? সাইটের পরিচিতি বাড়ানো , নাকি পণ্য সেল করা নাকি নিজস্ব ব্র্যান্ড ইমেজ তৈরি করা ।এই অবজেক্টিভ অর্জন করতে হলে আপনার কি ধরণের প্রোমোশন প্রয়োজন, এই প্রোমোশন এর জন্য কি পরিমাণ বাজেট প্রয়োজন ইত্যাদি।

·         ভিজিটর এঙ্গেজমেন্ট
কনটেন্ট হল একটা সাইটের প্রাণ । আপনার প্রোডাক্ট এমন ভাবে উপস্থাপন করুণ যাতে করে ভিজিটর সেটি দেখতে আগ্রহী বোধ করে। অনলাইন পণ্য বিক্রির সবচেয়ে বড় সুবিধা হল আপনার সম্ভাব্য ক্রেতা যদি পণ্যর বিজ্ঞাপন দেখে একবার পছন্দ করে ফেলেন তাহলে সেল মোটামুটি নিশ্চিত হওয়া যায়।

·         রিপিট ভিজিটর নিশ্চিত করুণ।
মনে রাখবেন মার্কেটিং করলে ভিজিটর পেয়ে যাবেন কিন্তু এই ভিজিটর পুনরায় কেন আপনার সাইট ভিজিট করবে সে কথা মাথায় রেখে সাইটে নিয়মিত নতুনত্ব আনার চেষ্টা করুণ। যেমন, সেটা হতে পারে পণ্যের ভিন্নতা কিংবা সপ্তাহে যেকোনো একদিন বিশেষ মূল্য ছাড় ইত্যাদি। তাতে করে ভিজিটর আপনার সাইটের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবে এবং নিয়মিত সাইট ভিজিট করবে। 

Thursday, May 1, 2014

প্রথম আলো কিংবা বিডিনিউজ২৪.কম এর মত জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল গুলো কেন ভিজিটর হারাচ্ছে ?


অনেকেই মনে করছেন অনলাইন নিউজ পোর্টাল এর ব্যাবসা মানেই খুব লাভ জনক কোন কিছু।প্রচুর নিউজ সাইট হয়েছে ঠিকই, কিন্তু আপনি নিজেই চিন্তা করে দেখুন ৩০ সেকেন্ড সময়ের এর মধ্যে কয়টার সাইটের নাম বলতে পারবেন। যত দূর আমি দেখেছি যেই নিউজটা প্রথমে বড় কোন পোর্টাল এ পাবলিশ হয় তার কিছুক্ষণ পরই অন্যান্য ছোট খাটো নিউজ পোর্টাল গুলোতে তা কপি-পেস্ট বা সামান্য পরিবর্তন করে পাবলিশ হয়। 

০২-০৫-২০১৪ তে প্রথম আলোতে পাবলিশ হওয়া নিউজ  



এক ঘণ্টা পর সেই নিউজটিই প্রকাশ করল অন্য একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল 



ছোট খাট নিউজ পোর্টাল মার্কেটিং এর জন্য অদ্ভুত এক পন্থা বেছে নিয়েছে হয়তো বা অনেকেই ইদানীং লক্ষ্য করেছেন। একটা সময় নিউজ মানেই ছিল প্রতিদিন ভোঁর পর্যন্ত অপেক্ষা করা, সেটা খবরের কাগজ হোক কিংবা অনলাইন পোর্টাল । এক সময় নিউজ পোর্টাল গুলো ২৪ ঘণ্টা আপডেট দেয়া শুরু করল, যা নতুন করে ভিজিটর কে আকৃষ্ট করার জন্য যথেষ্ট ছিল । সেই সময়টাতেই অনলাইন পোর্টাল গুলতে ভিজিটর বেড়ে যায়। কিছু দিন পর শুরু নতুন ট্রেন্ড শুরু হলো, যে আপডেটেড নিউজ ফেসবুক এ শেয়ার করতে হবে। নিউজ পোর্টাল গুলো রীতিমতো প্রতিযোগিতায় নেমে পড়লো কার নিউজ সবার আগে ফেসবুক এ শেয়ার হবে। শুধু তাই নয় এরা সম্ভবত চেষ্টাও করেছে একে অন্যের সার্ভার হ্যাঁক করতে। যার ফলাফল অত্তান্ত গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে নাম করা নিউজ পোর্টাল এর সার্ভার ডাউন এবং সেই সুযোগে অন্যদের অর্জন অতিরিক্ত কিছু ভিজিটর। আর ওয়েবসাইটে ভিজিটর বাড়ালে সুফল কি এটা আপনি অবশ্যই বেশ ভালো করেই বুঝতে পারছেন। ভিজিটর বেড়ে যাওয়া মানেই অনেক বেশী মূল্যের কমার্শিয়াল অ্যাড এর স্লট বিক্রি হওয়া (অনলাইন নিউজ পোর্টাল এর এটাই মূল বিজনেস)।  ঠিক এই মুহূর্তেই অনেকেই আকৃষ্ট হলো নতুন নতুন নিউজ পোর্টাল খোলার ব্যাবসায়। যাদের  (রাজনিতিবিদ/ ব্যাবসায়ী ) বেশ শক্ত লিঙ্কআপ এবং পরিচিতি আছে ,তারা কোন রকম মার্কেটিং বা প্রমোশন না করেই নিজস্ব নিউজ পোর্টাল দিয়ে খুব ভালো ব্যাবসা করে ফেলেছেন। আর তা দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছেন নতুন উদ্যোক্তারা , এদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো ধরেই নিয়েছেন অনলাইন নিউজ পোর্টাল মানেই লাখ লাখ টাকার ব্যাবসা, কিন্তু তারা কখনই ফোকাস করেননি এই ব্যাবসাটি আসলে কি ভাবে হয়, একটা ওয়েব পোর্টাল খুলে রাখলেই কি লাখ টাকার অ্যাড পাওয়া সম্ভব...। আর যদি অ্যাড নাই পান তবে আপনার ব্যাবসা কোথায় ? অনলাইন নিউজ পোর্টাল এর টার্গেট কাস্টোমার ইন্টারনেট বাবহারকারী আর সবচেয়ে বেশী সংখ্যক ইন্টারনেট ব্যাবহারকারী এই মুহূর্তে শুধু ফেইসবুকেই পাওয়া সম্ভব। এই চিন্তা মাথায় রেখে নিউজ পোর্টাল গুলো ফেইসবুক এ নিউজ পোস্ট দেয় । নিউজটি যদি ইন্টারেস্ট গ্রো করানোর মত হয় তাহলে আপনি অবশ্যই আপনি সেটায় ক্লিক করবেন , সেটা যেই নিউজ পোর্টালই হোক না কেন। এই স্ট্যাটেজি কম বেশী সব নিউজ পোর্টাল গুলোই করছে ।  মূল কথা হলো অধিকাংশ সময়, খবর জানার জন্য আপনি এখন আর বিশেষ কোন ওয়েব সাইটে ভিজিট করছেন না বরং ফেসবুক এ শেয়ারকৃত যে খবরটির হেডলাইন আপনার ভালো লাগছে তাতে ক্লিক করেই আপনি কোন একটা ওয়েব সাইটে প্রবেশ করছেন। কোন কোন ক্ষেত্রে আপনি নিজের অজান্তেই অপরিচিত ওয়েব পোর্টালও প্রবেশ করছেন তাও শুধু মাত্র খবরের হেড লাইনের প্রতি আগ্রহী হয়েই। যার দরুন পরিচিত নিউজ পোর্টাল গুলো তাদের ভিজিটর হারাচ্ছে। ব্যাপারটা অনেকটা এমন যে, আগে ইন্টারনেট ভিজিটর ছিল ১০০ জন আর তাদের জন্য নিউজ পোর্টাল ছিল ৪ টা এবং মার্কেটে এতো বেশী প্রতিযোগিতা ছিল না। কিন্তু এখন ইন্টারনেট ভিজিটর ৫০০ জন আর নিউজ পোর্টাল আছে ১০০টা এবং মার্কেট অসম্ভব রকম প্রতিযোগিতা মূলক।যে যেভাবে পারছে ভিজিটরকে নিজের দিকে টানছে। যার কারণে ইন্টারনেট বাবহারকারি বাড়লেও নিউজ পোর্টাল গুলো ভিজিটর ধরে রাখতে পারছে না । কারণ নিউজ পোর্টাল গুলো তাদের পোর্টাল এ কি নিউজ দিল সেটা এখন আর আপনি দেখছেন না , বরং ফেসবুক এ শেয়ারকৃত যে নিউজটির হেডলাইন আপনার কাছে ভালো লাগছে আপনি সেটাতেই ক্লিক করছেন।  

   

***** সম্ভাবনাময় এক ব্যাবসার নাম ই-কমার্স ****

(অবশ্যই ধৈর্য এবং সময় নিয়ে পড়বেন, আশাকরি আপনার সময়ের অপচয় হবে না)
চারিদিকে ই-কমার্স নিয়ে যে ঘূর্ণি ঝড় চলছে তা দেখে আর বসে থাকতে পারলাম না, মনে হল এবার হয়তো এ নিয়ে লেখা লেখির সময় এসেছে। প্রথমেই বলি আমি ই-কমার্স বিষয়ে মহান কোন বাক্তিত্ব নই। যেহেতু অভিজ্ঞতা না থাকলে এ ধরণের একটি পোস্ট করা একদমই মূল্যহীন এবং বেমানান তাই আমার অভিজ্ঞতার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা তুলে ধরছি।
অনুপ্রেরণা, কাজ করার আগ্রহ এবং অভিজ্ঞতাঃ
২০০৩ সালে প্রথম ক্লিকবিডি.কম দেখে আনুপ্রানিত হই অনলাইন মার্কেট প্লেস সম্পর্কে। এরপর থেকে আমার কাছে ইন্টারনেট ব্রাউজিং মানেই ছিল ক্লিকবিডি.কম এ ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটানো । আশ্চর্য হতাম কত কিনা কিনতে পাওয়া যায় যা হয়তো এই সাইটা না থাকলে জানতামই না , এক জন মানুষের অপ্রয়োজনীয় পণ্যটি কিভাবে অন্য একজন মানুষের প্রয়োজন মেটায় ... ইত্যাদি ইত্যাদি। ২০০৬ সালে সেলবাজার এর জন্ম আমার চোখের সামনেই। এ রকম একটা সাইট দেখে আমার অবস্থা আনন্দে আত্মহারা হয়ে যাবার মতই। দুই বছর খুবই আগ্রহ নিয়ে পরে থাকলাম ক্লিকবিডি আর সেল বাজার এর উপর। বুঝতে বাকী রইলনা, কতটা সম্ভাবনাময় হতে পারে এই সেক্টরটা।
সাহস করে পথে নামাঃ
২০০৮ এ দিকে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না , ১৫,০০০ টাকা মূলধন নিতে মাঠে নেমে পড়লাম। ক্লিকবিডি আর সেল বাজার এ একাউন্ট খুললাম, ট্রেড করার জন্য সম্পূর্ণ নতুন ২ টি মোবাইল সংযোগ নিলাম। যেহেতু ইতিমধ্যে অনেক দিন ধরেই অনলাইন মার্কেটপ্লেস এর সাথে আমি পরিচিত তাই খুব ভালো করেই জানতাম কোন ধরণের পণ্য মানুষ অনলাইনে দেখে কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করবে। বাস্তবে মোটেও তার ব্যাতিক্রম হল না। সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেট আর মোতালেব প্লাজা বিভিন্ন ধরণের মোবাইল এবং কম্পিউটার এক্সোসরিস সংগ্রহ করতে থাকি এবং ক্লিকবিডি আর সেল বাজার এর মাধ্যমে পণ্য গুলো প্রোমোট করতে থকি। অভাবনীয় সাড়া পেয়েছি যা কখন কল্পনাও করতে পারিনি। অনেকেই আমার মত শুরু করেছিলেন কিন্তু সত্যি বলতে প্রতিযগিতায় আমার আশেপাশেও আসতে পারেননি।
প্রতিযোগিতায় নিজের অনড় অবস্থানঃ
যে পণ্য আমি বিক্রি করছিলাম ১,৯৫০ টাকায় একই পণ্য অন্যরা বিক্রি করত ১,৬০০ টাকায় [ বিঃদ্রঃ এই বিষয়ে আমি একটি পোস্ট লিখতে চেয়েছিলাম, যেহেতু এখানে বিস্তারিত আলোচনা করব তাই পৃথক ভাবে আর কোন পোস্ট দিচ্ছনা ] । নিজেই চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম ১,৬০০ টাকার পণ্য বাদ দিয়ে মানুষ আমার পণ্য কেন কিনছে ? উত্তরটা খুঁজে পেতে মোটেও সমস্যা হল না। আমি যাদের মাধ্যমে পণ্য গুলো সংগ্রহ করতাম তারা সবাই (সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেট এবং মোতালেব প্লাজা’র পাইকারি পণ্য বিক্রেতা) জানতো আমার পুঁজি কম, কোন দোকান বা শোরুম নেই এবং আমি শুধু মাত্র অনলাইন এর মাধমেই পণ্য বিক্রি করি যে কারণে কখনই তারা(মোটেও সবাই না) আমাকে লো-গ্রেডেড পণ্য দেয়নি বরং অনেকই উৎসাহিত করেছে এমনকি মাঝে মাঝে এমনটাও হয়েছে যে কোন পণ্য আমি বিক্রি করতে পারিনি পরবর্তীতে সেটা পরিবর্তন করে অন্য পণ্য নিয়ে এসেছি । এমন সুযোগ হয়তো সবাই পায়না সম্ভবত আমি কিছুটা সৌভাগ্যবান ছিলাম ,তাই পেয়েছি।
১.অসাধারণ পণ্যঃ
একসময় আমার বহুল বিক্রীত পণ্যটি ছিল NOKIA BH 503 Bluetooth Headphone. যার তৎকালীন বিক্রয় মূল্য ছিল ১,৯৫০ টাকা আর আমার চারপাশের সবাই বিক্রি করত ১,৬০০-১,৮০০ টাকায়। আমি একমাসে সর্বোচ্চ ১২০ পিস হেডফোন সেল করেছি যা হয়তো অনেকের জন্য ভালো পজিশনে দোকান নিয়েও কারতে পারাটা কষ্টসাধ্য । চলুন জানা যাক এই রহস্যের পেছনের কথা।
মোবাইল এক্সোসরিস এবং বিভিন্ন গ্যাঁজেট এর প্রতি আমার দুর্বলতা অনেক আগে থেকেই। তো নিজেই যখন কিনা এই ধরণের পণ্যগুলো নিয়ে কাজ করছিলাম তখন আর লোভ সামলাতে পারিনি, প্রতিটা পণ্যের এক পিস করে স্যাম্পল নিজের কালেকশনেই রেখে দিতাম এবং খুব আগ্রহ সহকারে ব্যাবহার করতাম। ফলাফল , প্রতিটা পণ্য কতক্ষণ ব্যাকআপ দেয়, কতক্ষণ চার্জ দিতে হবে, সাউন্ড কোয়ালিটি কেমন, কীভাবে ব্যাবহার করতে হবে, কি কি ফিচার ইত্যাদি খুঁটি-নাটি সব বিষয় গুলোই খুব ভালো ভাবে নিজে জানতাম এবং অনলাইনে অ্যাড দেবার সময় বিশেষ ভাবে ব্যাপার গুলো উপস্থাপন করতাম। কথা আর কাজের মিল থাকায় মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে মোটেও সমস্যায় পড়তে হয়নি, বরং ক্লাইন্ট খুশী হয়েই তার পরিচিত সবার কাছে আমকে রেফার করে দিত।
২. মার্কেটিং
আমি বিশ্বাস করি সৃষ্টিকর্তা সবাইকেই কোন না কোন দিক দিয়ে অসাধারণ মেধা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। আর আমি মনে করি আমার মেধাটা শুধুই মার্কেটিং আর প্লানিং নিয়ে। কিছুক্ষণ আগেই একটা কথা লিখেছিলাম “কথা আর কাজের মিল থাকায় মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে মোটেও সমস্যায় পড়তে হয়নি, বরং ক্লাইন্ট খুশী হয়েই তার পরিচিত সবার কাছে আমকে রেফার করে দিত ” ... যেসব জায়গায় আমাকে রেফার করার হতো তার অধিকাংশই ছিল অফিস তাও আবার গ্রামীণফোন, এরিক্সন , রেডিও ফুর্তি, ডাচ বাংলা ব্যাংক, সিটিসেল ... এই ধরণের হাই-প্রোফাইল কর্পোরেট অফিসে যারা কিনা বেশ সৌখিন ধরণের মানুষ। তো আমি প্রোডাক্ট নিয়ে সবাইকে ডেলিভারি দিতাম এবং আমার বিশাল বড় কাঁধে ঝোলানোর ব্যাগটায় সবসময়ই বিভিন্ন রকম পণ্য বোঝাই থাকতো। ফলাফল, সবাই একরকম হুমড়ি খেয়ে পড়তো আমার কাছে আর কি কি পণ্য আছে সেটা দেখা এবং নেয়ার জন্য এবং যেহেতু পণ্য গুলো সম্পর্কে আমার খুব ভালো ধারণা ছিল তাই সেকেন্ডের মধ্যেই পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত বলে দিতে পারতাম। প্রতিটা অফিসে একবার প্রবেশ করা মানেই ২/১ দিন পর পর অর্ডার পাওয়া এবং কথা আর কাজের মিল থাকায় একটা মানুষ নিজ থেকেই অন্য একটা মানুষকে রেফার করে দিত।
৩. রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট এবং ভ্যালু এডিশনঃ
আজকে আমার মার্কেটে দখল আছে বলে যে কালেও থাকবে তা ভাবাটা চরম বোকামী এবং এই বোকামীটি আমি করিনি। বুঝতে পারছিলাম কম্পিটিটররা আমার স্ট্যটেজি ফলো করা শরু করে দিয়েছে , যার দরুন আমি বাধ্য হচ্ছি দিন দিন প্রোডাক্ট এরদাম কমাতে। এদিকে অন্যরা, মানে যারা কিনা ইতিমধ্যেই আমার থেকে পণ্য নিয়েছে তারা ব্যাপারটা অবশ্যই ভালোভাবে মেনে নিতে পারবে না যদি কিনা এখন পণ্যের দাম কমে যায়। সোজা কথায় আমার সম্পর্কে নেগেটিভ ধারণা হয়ে যাবে। এরপরই শুরু করলাম “ভ্যালু এডিশন প্রোগ্রাম” পোর্টেবল স্পীকার এর সাথে চার্জার মেমোরি কার্ড অ্যাড্যাপ্টার ফ্রি, হেডফোনের সাথে পাউচ ফ্রি ইত্যাদি। ফলাফল যেটা দাঁড়ালো , তা হল ৩০ টাকা অতিরিক্ত খরচ করে ২০ টাকা অতিরিক্ত লাভ করা অন্যদিক ফ্রি পেতে সবাই পছন্দ করে তাই কাস্টোমারও খুশী। মাস খানেক এর মধ্যেই আবার সেই পুরনো সমস্যা দেখা দিল “কম্পিটিটররা আমার স্ট্যটেজি ফলো করা শরু করে দিয়েছে” । কিন্তু এবারও আমি থেকে যায়নি। নতুন ভাবে প্ল্যানিং করা শুরু করলাম, যাদের কাছে এতদিন পণ্য বিক্রি করেছি তাদের থেকে বাছাই করা কিছু ক্লায়েন্ট কে ফোন করে খবর নেয়া শুরু করলাম , যে পণ্যটি কেমন সার্ভিস দিচ্ছে কোন সমস্যা দিচ্ছে কিনা ইত্যাদি। রেডিও ফুর্তির একজন সিনিয়র ইঞ্জিনিয়র বেশ বিরক্ত হয়েই বললেন “আপনার প্রোডাক্ট ভালো না, নষ্ট হয়ে গিয়েছে” । উল্লেখ্য প্রোডাক্টটি ছিল NOKIA BH 503 Bluetooth Headphone। পরদিন একটা অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে আমি উনার সাথে দেখে করি এবং কোন রকম প্রশ্ন না করে শুধু দুঃখিত বলে নতুন একটা প্রোডাক্ট তাকে দেই । ভদ্রলোক এতটাই ভালো ভালে ব্যাপার টা গ্রহন করে যে পরবর্তীতে গোটা পঞ্চাশেক হেডফোন শুধুমাত্র তার রেফারেন্সই বিক্রি করেছি।
অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদ/সমস্যাঃ
সেলবাজার আর ক্লিকবিডি’র মাধ্যমে যখন নিজেকে নিয়ে যখন খুব ভালো উচ্চতায় ঠিক সেই সময়টায় অঘটন ঘটালো ক্লিকবিডি। উল্লেখ্য ক্লিকবিডি তে তখন অ্যাড দিতে টাকা লাগতো , হটাত করেই তারা অ্যাড এর জন্য অস্বাভাবিক রকম চার্জ করা শুরু করল এবং ফলাফল অধঃপতন। এতো বছর ধরে চলতে থাকা সাইটটি এক মাসের কম সময়ে অর্ধেকের বেশী ভিজিটর হারিয়ে ফেলল। শিখলাম ব্র্যান্ড তৈরি করতে অনেক সময় লাগে কিন্তু হারাতে সেকেন্ডও লাগেনা। সেই থেকে ক্লিকবিডি উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে অনেকবারই মাঝে কিছুটা সফলতা পেলেও আর কখনই ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি যার এক মাত্র কারণ মার্কেট সম্পর্কে সম্ভবত সঠিক ধারণাটি অর্জন করতে পারেনি।
মাত্রাধিক প্রতিযোগিতা এবং ব্র্যান্ড বিল্ডিং এর প্রয়োজনীয়তাঃ _ _ _ _ _ _
****** আজকে আর লিখছি না , আশা করছি কিছুদিন পর আবার লিখতে পরবো এবং একসময় পোস্টটি সম্পূর্ণ হলে ডক আকারে প্রকাশ করবো *******

চলবে ... 

ভিজিটর হারাচ্ছে দেশের জনপ্রিয় ওয়েব সাইট গুলো

খুব বড় ধরণের পরিকল্পনা আছে বলেই বিজনেস, মার্কেটিং এবং ই-কমার্স নিয়ে আমার এতো বেশী মাতামাতি। বলতে পারেন অনলাইন নির্ভর বিজনেস নিয়ে মোটামুটি গবেষণা শুরু করে দিয়েছি। কিন্তু তার ফল স্বরূপ যে তথ্যটি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি তা মোটেও আনন্দের নয়। জনপ্রিয় ওয়েব পোর্টাল এবং বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে আশঙ্খা জনক ভাবে ভিজিটর কমছে । আর অনলাইন নিউজ পোর্টাল গুলোর যে অবস্থা তাতে করে এই ব্যাবসায় গতানুগতিক ভাবে না এগোনই ভালো।

২০১৩ - ২০১৪ সালে বিভিন্ন ওয়েব সাইটে ভিজিটর এর অবস্থা 

২০১২ - ২০১৩ সালে বিভিন্ন ওয়েব সাইটে ভিজিটর এর অবস্থা 




এটা ২০১২ - ২০১৩ রিডিং যদিও ওই সময়টাতে সব ওয়েবসাইটের রিডিং নেয়ার প্রয়োজন হয় নি। শুধু মাত্র ক্লাসিফাইড সাইট গুলোর তথ্য সংগ্রহ করেছিলাম। প্রথম আলোর মত নিউজ পোর্টাল এ যখন অ্যাড ওয়ার্ড এর অ্যাড দিচ্ছে তখন তো ধারণা করাই যেতে পারে যে এই সেক্টরে বড় ধরণের কোন সমস্যা হচ্ছে । কারণ যেখানে আজকে গুগল এর অ্যাড শো করছে এক সময় সেটা সম্ভবত ২-২.৫ লক্ষ টাকার স্লট ছিল।


পাঠকের মন্তব্যঃ 
আপনার রিসার্চ নিয়ে প্রশ্ন তুলছি না। বরং আপনার সাথে বলছি যে জনপ্রিয় সাইট গুলার ভিজিটর আসলেই কমছে। কিন্তু এর পিছনে বেশ কিছু কারণ আছে। সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করি। আপনার লিষ্ট ধরেই নামি। প্রথম তিনটা নিউজ সাইট। এদের ক্লিক কমবার কারণ হচ্ছে নতুন নতুন প্রচুর নিউজ সাইট হয়েছে। যারা লাগাতার তাদের পোষ্ট ফেসবুক সহ সব খানে শেয়ার করছে। যার ফলে একবার কেউ একটা নিউজ পড়ে ফেললে আর ঐ নিউজ পড়তে অন্য সাইটে ঢুকছে না। যার ফলে তাদের ভিজিটর কমছে, যদিও আসলে পুরো দেশের ভিজিটর বেড়েছে বহুগুনে। আবার বিডিনিউজ এবং বাংলানিউজ তাদের অন্ধ লেখালেখির কারণে প্রচুর মানুষের কাছ থেকে দূরে সরে গেছে। কাল্পনিক পোষ্টের এক আড্ডা খানা হচ্ছে বাংলা নিউজ। এবং তাদের পিছিয়ে পড়বার যথেষ্ট কারণ আছে। তাই বলে এতটা কমেছে জানতাম না।

দ্বিতীয়ত আছে টেকটিউনস। সম্প্রতি কালে টেকটিউনস তাদের ছ্যাচড়া নিতির কারণে প্রচুর ভাল ভাল ব্লগারকে বের করে দিয়েছে। বা এমন কিছু করেছে যাতে ভাল ব্লগাররা সাইটে না থাকে। তারা জোর দিয়েছে তাদের ভিজিটর সংখ্যা এবং পোষ্ট সংখ্যা বাড়াতে, কিন্তু কোয়ালিটিতে নেমে গেছে। এবং এর ধারাবাহিকতায় অনেক ভাল ব্লগারই ঐখান থেকে চলে এসে নিজের সাইট খুলেছে। অন্য কারও উদাহরণ উদাহরণ না, আমার উদাহরণ দেই। আগে আমার সারাদিন টেকটিউনস খোলা থাকত। কিন্তু এখন টিটি আমাকে টাকা দিলেও আমি ঐখানে যাব না। কারণ তারা আমাকে তাদের সাইট ছাড়তে বাধ্য করেছে। টাকা দিয়ে মার্কেটিং করলে ওদের সমস্যা নাই। কিন্তু কেউ যদি ৩০০০ ওয়ার্ডের একটি তথ্য বহুল পোষ্ট দিয়ে নিচে একটি লিংক দেয়, তাহলে ওরা লেখককে কোন কারণ ছাড়াই ব্যান করে। আবার লিংক যদি বিদেশী সাইটের হয়, তাইলে আবার কিছু বলে না। এটা ওদের ভিজিটর কমবার কারণ।

সেলবাজার এবং বিক্রয়েরও দশা একই। ওএলএক্সের কারণে দুইটাই এখন পিছিয়ে যাচ্ছে। আর ক্লিক বিডি যে এখনও এত ভিজিটর পায় তাই অবাক করা বিষয়। কারণ ওদের এখনতো মার্কেটেই দেখি না।



তবে দেশে নতুন ভিজিটর বাড়ছে প্রতিনিয়ত। তাই ভিজিটর এই হারে না কমে আরও বাড়বার কথা ছিল।


লেখকের বক্তব্যঃ 
নিউজ পোর্টাল এর ব্যাপারটার সাথে পুরোপুরি একমত হতে পারছি না ।কিন্তু টেকটিউনস এর ব্যাপারে আপনার সাথে একমত, কারণ আমি এই একই কারণে টেকটিউনস থেকে দূরে সরে গিয়েছি। সেলবাজার এবং বিক্রয়.কম এর যে ব্যাপারটা বললেন সেটার সাথে একদমই একমত হতে পারছি না। আমার অভিজ্ঞতা যা বলে তা হলো, সেলবাজার এখন মৃত প্রায়, যার প্রধান কারণ অন্ধের মত বিক্রয়.কম কে কপি করা। বিক্রয়.কম এর সাইট OLX থেকে ইউজার ফ্রেন্ডলি। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো OLX মোটামুটি সব অ্যাড সেলবাজার আর বিক্রয়.কম থেকে নিজেদের সাইটে ডাটা এন্ট্রি দেয়। বিক্রয়.কম এ কোন অ্যাড পোস্ট করে দেখতে পারেন তার দু-এক দিনের মধ্যেই OLX থেকে ফোন দিয়ে আপনার অ্যাডটা OLX এ কপি করার পারমিশোন চাইবে। এতো মার্কেটিং এর পরও OLX এর বর্তমান ভিজিটর ৫৫,০৮৩ যেখানে সেলবাজার এর ভিজিটর ৬৬,২৩৩ এবং বিক্রয়.কম এর ১,১২,৫৬৭ ।

পাঠকের মন্তব্যঃ 
তাহলে প্রতিদিন যে ভিজিটর বাড়ছে, তারা যাচ্ছে কই? নাকি মানুষ এই ধরণের সাইটে ঢোকা বন্ধ করে দিচ্ছে? সেটা অবশ্য বিশ্বাসযোগ্য না।

লেখকের বক্তব্যঃ 
না, মানুষ অবশ্যই এই ধরণের সাইটে ঢোকা বন্ধা করে দিচ্ছে না। কিন্তু বিক্রয়.কম যতই মার্কেটিং করুক , আমি বা আপনি ততোক্ষণ সাইট ভিজিট করবোনা যতক্ষণ কোন দরকার না হয়। সোজা কথায় যখন কোন কিছু কেনা অথবা বিক্রয় করার দরকার না হবে, তখন কিন্তু এই সাইটে সাধারণত কেউ ভিজিট করবে না। কিন্তু ফেইসবুক এর কথা চিন্তা করুন, কারণে অকারনে মোটামুটি সবাই ব্যাবহার করছে। এবং নিউজ পড়া থেকে শুরু করে ক্রয়-বিক্রয় (ক্লাসিফাইড) করার কাজটি অনায়াসে হচ্ছে ফেসবুক এ। ফেসবুক এর "Buy & Sell (Bangladesh Edition)-Official (TM)" গ্রুপটি নিশ্চয় দেখেছেন। ৩০,৯৪৩ জন মেম্বারের বিশাল এই গ্রুপটিতে প্রতি নিয়ত অ্যাড পোস্ট হচ্ছে। সোজা কথা মানুষ ফেসবুক এ বসেই সব কিছু করার সুযোগ পাচ্ছে। ভিজিটর অবশ্যই বাড়ছে এবং সেটা ফেইসবুক এ কারণ এই ফেসবুক থেকে মোটামুটি সব কিছু করার সুযোগ মানুষ পাচ্ছে। অনেকটা সুপার সপের সাথে তুলনা করতে পারেন। এক ছাদের নিছে সব পাই বলেই তো আমরা সুপার সপ এ যাই। ভিজিটর দেখার জন্য website.informer ব্যাবহার করতে পারেন। তাতে করে আপনি নিজেই দেখতে পারবেন কোন সাইটের কি অবস্থা। ধন্যবাদ , ভালো থাকবেন।

*** দুঃশ্চিন্তার বিষয় যখন মার্কেটিং ***

আমি, বিজনেস এবং মার্কেটিং প্ল্যান সম্পর্কে খুবই সাধারণ কিছু টিপস্ সবার সাথে শেয়ার করছি , আশা করছি সময় নিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করলে আপনার সমস্যার সমাধান আপনি নিজেই করতে পারবেন। 

• যে কোন ব্যাবসাই শুরু করার আগেই যাচাই করে নিন, আপনার পণ্য কিংবা সেবা গ্রহণ করার জন্য বাজারে পর্যাপ্ত চাহিদা আছে কিনা । আপনি কি তৈরি করছেন তার থেকে গুরুত্ব দিন ভোক্তা আপনার কাছ থেকে কি চাইছে। 

• আপনার প্রতিযোগী কে বা কারা আছেন এবং মার্কেটিং এর জন্য তারা কোন পদ্ধতি অনুসরণ করছে। আপনার প্রতিযোগীরা মার্কেটিং এর জন্য যে পদ্ধতি অনুসরণ করছে, ভুলেও তাকে অনুকরন/অনুসরণ করতে যাবেন না, তাতে করে লাভের লাভ কিছুই হবে না বরং মার্কেটে তার গ্রহণযোগ্যাটা অনেকটাই বেড়ে যাবে এবং অযথা আপনার শ্রম আর অর্থ অপচয় হবে। 

• মার্কেটিং প্ল্যান তৈরির সময় “ভোক্তার প্রয়োজন” কে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিন , সহজ কথায় বলতে গেলে, কেন এক জন বাক্তি আপনার পণ্যটি কিনবে কিংবা আপনার সেবাটি ব্যবহার করবে। যেমনঃ হতেই পারে, আপনি আপনার ই-কমার্স সাইটে ঝাড়ু বিক্রি করছেন। মার্কেটিং জন্য যদি একটা ঝাড়ুর ছবি দিয়ে ফেসবুক অ্যাড দিয়ে দেন তাহলে নেহাত আপনাকে হাস্যরসের পাত্র হতে হবে। কিন্তু এই ঝাড়ুই যদি “ গৃহস্থলীর নিত্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জমাদি” হিসেবে প্রচার করতে পারেন তবে অবশ্যই কিছু নিয়মিত ক্রেতা আপনি পেয়ে যাবেন যারা কিনা ঘরে বসেই এ ধরণের পণ্য কিনতে সাচ্ছন্দ বোধ করবে। 

• মার্কেটিং প্ল্যান কখনওই দীর্ঘমেয়াদি করবেন না [এই পয়েন্টের সাথে অনেকেরই মতবিরোধ থাকতে পারে, আমি শুধু মাত্র আমার ব্যাক্তিগত মতবাদ প্রকাশ করছি।] প্রতি মুহূর্তেই আমাদের চারপাশের পরিবেশ পরিবর্তিত হচ্ছে। এই পরিবর্তনের সাথে আপনার প্ল্যানের সামঞ্জস্য না থাকলে সেটা কখনই সফলতা বয়ে আনবেনা। যেমন ধরুন আপনি ষ্ট্রীটফুড এর ব্যাবসা করেন এবং আপনার মূল প্রোডাক্ট চিকেন ফ্রাই, খুব মার্কেটিং করলেন এবং বেশ ভালো সারাও পেলেন। আরও বেশী সারা পাবার আসায় বড় ধরণের মার্কেটিং এর পরিকল্পনা করলেন কিন্তু হটাৎ করেই যদি বার্ডফ্লু রোগের আবির্ভাব হয় .... বিনিয়োগ তুলতেই তখন হিমশিম খেতে হবে। 

• যেই মুহূর্তে আনুষ্ঠানিক ভাবে ব্যাবসা শুরু করেছেন, ঠিক সেই মুহূর্ত থেকেই পণ্য/সেবার মান কিভাবে আরও উন্নত এবং ইউনিক করা যায় তা নিয়ে ভাবুন। কারণ তা যদি না করেন দেখবেন আপনার কনসেপ্ট অনুকরণ করেই ,কাল কেউ না কেউ আপনার চেয়েও শতগুণ ভালো কোন সার্ভিস লঞ্ছ করে ফেলেছেন এবং আপনার কাস্টোমার স্বার্থপরের মত আপনাকে ভুলে গিয়ে তার সেবা গ্রহণ করছে।

• “Customer Satisfaction” এ খুব বেশী গুরুত্ব দিন। ধরুন আপনি মোবাইল ফোন বিক্রেতা, আপনার দোকানে একটি সিম্ফনি সেটের যে মূল্য আপনার পাশের দোকানেও তাই। সেক্ষেত্রে কাস্টোমারকে একটা মেমোরি কার্ড ফ্রি দিয়ে দিন। অথবা দোকানে একটা ব্যানার লাগিয়ে দিন, শনিবারে যেকোনো হান্ডসেট কিনলে একটি ৮গিবি মেমোরি কার্ড ফ্রি, রবিবার এ একটি হান্ডসেট কিনলে “বিটস সোলো” এয়ার ফোন ফ্রি ইত্যাদি। আপনার কাস্টোমারই তার পরিচিতদের আপনার দোকানে রেফার করে দেবে, যা হবে বিনা খরছে খুবই সফল একটা মার্কেটিং।